গোলাপ মাহমুদ সৌরভ

অনয় ও ঘাস ফড়িংয়ের লুকোচুরি

মৃদু হাওয়া হেমন্তের মিষ্টি রোদে উদাস দুপুরে বাড়ির আঙিনায় অনয় ও ঘাস ফড়িংয়ের লুকোচুরি খেলা। রাস্তার দুপাশে সবুজ পাতার সোনালী ধান। ঘাস ফড়িং উড়ে বেড়ায় মনের আনন্দে। কখনো সোনালী ধানের ডগায় আবার কখনো ডানা মেলে উঁচু নিচু হয়ে ঢেউ খেলে। অনয় রোজ রোজ ধান ক্ষেতের আইলে বসে ঘাস ফড়িং ধরার চেষ্টা করে। যখনই ফড়িং উড়ে এসে ধানের সবুজ পাতার উপর বসে তখনই অনয় চুপিচুপি ধরার চেষ্টা করে। ফড়িং ও খুব চালাক যখনই কোন আক্রমণের আবাস পায় তখনই উড়ে যায়। আবার ফড়িং শূন্যের উপর উড়ে বেড়ায় তখন অনয় সবুজ পাতার নিচে চুপটি করে বসে থাকে ফাঁদ পেতে থাকে কখন আবার ঘাসের ডগায় বসবে। অনয় বারবার চেষ্টা করে ঘাস ফড়িং ধরতে সক্ষম হয় না। অনয় ক্লান্ত হয়ে ক্ষেতের আইলে বসে মাথায় বুদ্ধি যোগাড় করে কিভাবে ফড়িং ধরা যায়। অবশেষে অনয়ের মাথায় একটি বুদ্ধি এলো গায়ের গেঞ্জি খুলে মাথার উপর দিয়ে হাতে কতোগুলো সবুজ ঘাস উঠিয়ে হাতে নিয়ে মূর্তি সেজে দাঁড়িয়ে থাকবে, বোকা ঘাস ফড়িং ক্ষেতে সবুজ ঘাস মনে করে উড়ে এসে বসবে তখনই তাকে সহজে ধরতে পারবে। অনয় নড়াচড়া না করে পুতুলের মতো নিঃশব্দে  নিরব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে অবশেষে ঘাস ফড়িং উড়ে এসে যখন হাতে ঘাসের উপর বসলো তখনই অনয় আরেক হাত দিয়ে মুঠ করে ঘাস ফড়িং কে চেপে ধরলো তারপর অনয় একটু স্বস্তি নিয়ে বসে পড়লো। অনয় ঘাস ফড়িং কে শক্ত হাতে চেপে ধরে বললো এই যে ঘাস ফড়িং বন্ধু এবার কি করবে অনেক লুকোচুরি খেলছো, আমাকে অনেক কষ্ট দিয়ে দৌড়েছো এবার কোথায় যাবে আর তোমাকে ছাড়বো না। অনয় সুতা দিয়ে ঘাস ফড়িং কে শক্ত করে বেঁধে দিলো যাতে করে আর উড়াল না দিতে পারে। তোমার পিছু অনেক ছুটছি ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করেছি কখন তোমাকে ধরবো। অনয় সুতা হাতে রেখে ঘাস ফড়িং কে উড়ার জন্য ছেড়ে দিয়েছে ফড়িং কিছুতেই উড়ে দূরে যেতে পারছে না। অনয় ফড়িং কে সাথে নিয়ে বাড়িতে চলে গেলো এবং সুতা বেঁধে গাছের ডালে বসিয়ে দিলো। ঘাস ফড়িংয়ের খাবার কীভাবে যোগাড় করা যায় সে ভাবনা মনে গেলো অনয় যদি খাবার না দেওয়া হয় তাহলে ঘাস ফড়িং কে বাঁচানো দায়, তাই অনয় বাড়ির আঙিনায় থেকে কিছু ঘাস ছিঁড়ে এনে বাড়ির উঠোনের পাশে মাটিতে পুঁতে দিলো যাতে করে ফড়িং বুঝতে পারে আমি তাকে ঘাস ক্ষেতে নিয়ে এসেছি। ঘাস ফড়িং বন্দী হয়ে নিজেকে অসহায় ভাবতে লাগলো খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিলো অনয় ঘাস ফড়িংয়ের পিটে হাত ভুলিয়ে দিয়ে বললো ভেঙে পড়োনা বন্ধু আমিতো আছি তোমাকে মারবো না শুধু মাত্র তোমার বন্ধু হয়ে খেলা করার জন্য ধরেছি। ঘাস ফড়িং তুমি আমার বন্ধু হও তাহলে তোমাকে ছেড়ে দিবো। ঘাস ফড়িং অনয়ের মানবতা দেকে চিন্তা মুক্ত হলো আর যাইহোক আমাকে মারবে না। একদিন দুইদিন পর ঘাস ফড়িং অনয়ের বন্ধু হলো যখনই অনয় ফড়িংয়ের কাছে আসে তখনই ফড়িং উড়ে এসে অনয়ের হাতে বসে অনয় ও ঘাস ফড়িং ভালো বন্ধুত্বের উদাহরণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *