মে দিবসের গান
আহমেদ হানিফ
ধুলিমাখা দেহে বিশ্ব বহিয়া চলেছে দুর্গম পথে,
দাঁড়াবার জো নেই আসন্ন বিপদে,
তারা পৃথিবী সাজানোর বায়না নিয়েছে-
সুনিপুণ-মাধুর্যের কারুকাজে।
অক্লান্ত খাটুনিতে সুরম্য প্রাসাদ,
পিচ কালো রাস্তায় লুকায়িত রক্তের দাগ,
অবসাদে তাগড়া দেহটা লুটিয়ে পড়লেই-
রুটির বন্দবস্ত চলে পরিবারে।
বড়ো বাবুদের জয়জয়কার আজ,
মেহনতি মানুষেরা অসহায়-অনাহারে,
কতক ফিরছে লাশ হয়ে বাড়ি-
কে রাখে খোঁজ তার-হারায় অগোচরে।
পৃথিবীর বুকে নতুনা-সৃজনে,
অক্লান্ত খাটুনিতে চলছে শ্রমিকের হাত,
তবুও যেন থেমে যায় হাতগুলো-
যখনি সময় আসে ভাঙা কুঁড়েঘর মেরামতের।
রোগশোকে অতিবাহিত দিনে,
পথ্য জুড়ে না শত চেষ্টাতেও,
সুরম্য প্রাসাদে বড়ো বাবুদের বাস,
শ্রমিকেরা মরে অসহায় হয়ে কুঁড়েঘরে।
আজি মে দিবসের ক্ষণে,
শত শত শুভেচ্ছার বাণী,
কত আশার গল্প শুনিয়ে শুনিয়ে দায়সারা-
ভণ্ডরা গাইবে নীতির গান।
পত্র-পত্রিকায় বড়ো বড়ো অক্ষরে,
শ্রমিকের অধিকার রক্ষার আহ্বান আজ,
তবে কতটা কার্যত আমাদের নীতি-
টিকে থাকবে সময়ের পালাক্রমে।
সমস্বরে চিৎকারে বলি আজ,
মানুষের মুক্তিতে রচিবে শান্তি,
শ্রমিকেরা পড়িবে মাথায় তাজ-
যদি হয় শত ভেদাভেদের অবসান।
মানবমুক্তির ফর্দ কষিয়ে,
মে দিবসের গান ধরি,
পৃথিবীর বুকে সৃজিত হবে তখন-
রইবে না ভেদাভেদ মালিক-শ্রমিকে।