লাল ফড়িং ও বাপ্পি • সাঈদুর রহমান লিটন

বাপ্পিদের বাড়ির পাশেই প্রাইমারি স্কুল। স্কুল ঘেঁষে বয়ে গেছে ছোট একটি নদী। শীতের শেষে নদীতে পানি থাকে না। নদীর পাড় দিয়ে ভাঙ্গন রোধ করার জন্য সিমেন্টের স্লাব বসিয়েছে। বিকেল হলে ছেলেমেয়েরা সেখানে খেলতে আসে। বাপ্পি ও সেদিন খেলতে এলো। নদীর পাড় দিয়ে কিছু জঙ্গলি গাছ গাছালী জন্মেছে।  তার উপর বসে আছে
একটা লাল রঙের  ভারি সুন্দর ফড়িং। ফড়িং টা বিকেলের পড়ন্ত রোদে ঝকমক করছে। ফড়িং এর লোভনীয় সৌন্দর্যে  মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে দেখছিল বাপ্পি। ফড়িং টি মাঝে  মাঝে উড়ে যাচ্ছে আবার গাছে বসছে। একবার বাপ্পির ইচ্ছে হলো ফড়িং টি ধরতে। বাপ্পি গুটিগুটি পায়ে ফড়িং এর লম্বা লেজ নিশব্দে ধরার চেষ্টা করলো। ফড়িং উড়ে গেল। ফড়িং কিছুক্ষণ পর আবার এসে গাছে বসল।  এবার বাপ্পি আরো সাবধানে ফড়িংয়ের কাছাকাছি গেল।
লেজটি প্রায় ছুঁয়েছিল বাপ্পি। কিন্তু ধরতে পারলো না। উড়ে গেল।  ফড়িং টি উড়ে গিয়ে যেন হাসাহাসি করছে মনে মনে। হয়ত তিরস্কার করছে ফড়িংটি।তোর মত বাপ্পির কাজ না আমাকে ধরা।
ফড়িং এবার উড়ে গিয়ে তাড়াতাড়িই যথাস্থানে বসল।
বাপ্পি ও দেরি না করে ফড়িং ধরার যুদ্ধে নেমে পড়ল।
ফড়িংয়ের লেজ এবার হাতে ছোঁয়া দিয়ে উড়ে গেল। ফড়িংটি এবার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই আবার এসে বসলো। বাপ্পি ভাবল এবার ধরেই ছাড়বো। বাপ্পি এবার আস্টেলের গাছের নিচে বসে গপ করে ধরার চেষ্টা করলো।
এবার ফড়িংয়ের পাখনার বারি লাগলো হাতে। ফড়িং যেন বাপ্পির সাথে মজা নিচ্ছে। বাপ্পি বারংবার চেষ্টা করে ঘেমে যাচ্ছে। ধরতে পারছে না। কিন্তু মনে মনে পণ করেছে ফড়িং আজ তোমাকে আমি ধরবোই। লাল ফড়িং দেখতে সুন্দর। বাপ্পি ফড়িংয়ের লেজে সুতা দিয়ে বেঁধে উড়াবে আকাশে।  কি মজাই না হবে। বাপ্পির মনে রঙিন স্বপ্ন। এ দিকে আরো কয়েকবার বাপ্পিকে হতাস করলো ফড়িং। বিকেলের সূর্যের আলো একবার ম্লান হয়ে গেল।  আলো আঁধারি হয়ে উঠল নদীর পাড়।ফড়িং একবার বাপ্পিকে  টা টা দিয়ে উড়ে চলে গেলো  চোখের সীমা পার করে। বাপ্পি ফড়িং ধরার যুদ্ধে আপাতত হার মানলেও মন থেকে মেনে নিতে পারলো না। সিদ্ধান্ত নিলো আজ ধরতে না পারলে কি হবে আগামীকাল ঠিকই তোমায় ধরবো।

সাঈদুর রহমান লিটন
গ্রামঃ জগন্নাথদী পোঃ ব্যাসদী গাজনা
মধুখালী ফরিদপুর।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।