মানুষ দেখার অসুখ
এম এ জিন্নাহ

হঠাৎ করে মেঘেদের কোলাহল থেমে গেলো,
নেমে এলো ঘনকালো অন্ধকার ।
নদীর টলমল করা জল থলথলে শীতল হয়ে এলো ক্ষণিক সময়ে,
পৃথিবীর অস্তিত্ব কেমন জানি ধূসর বর্ণে বর্ণিত হলো,
বাষ্পীয় শিশিরের মতো ধবল হতে থাকে মাঠ হতে মাঠ।
সূর্য এখনো আকাশে উজ্জ্বল হয়ে আছে,
অথচ, আমার চোখজুড়ে অন্ধকার ।
মাঝেমধ্যে আমার খেয়াল থাকেনা ,
আমার একটি অসুখ আছে , মানুষ দেখার অসুখ ।
যখন মানুষ দেখার ইচ্ছে হয়, তখন এই অসুখটির কার্যকারিতা অনুভব হয়,
চোখ ভর্তি নোনাজল থাকে, ঝরতে ঝরতে গড়ে ওঠে সমুদ্রে ।
চোখের অশ্রু হঠাৎ করে থৈথৈ খেলা বন্ধ করে দিলে
দেখি সবকিছু আগের মতোই ঠিক ,
কেবল আমার অসুস্থতা আমাকে বিচ্ছিন্ন করে রাখে
সকলের বিলাসিতা থেকে।
আসলেই আমার কোনো অসুখ নেই,
অসুখ বলতে যা আছে, তা কেবল মানুষ দেখার অসুখ।
পৃথিবীজুড়ে কতশত মানুষ, চেনা-অচেনা লক্ষ কোটি জন,
তারপরেও একটিমাত্র মুখ চোখের সামনে ভেসে থাকে উজ্জীবিত হয়ে ।
আমাকে মানুষ দেখার অসুখটি একটু একটু করে ঠুকরে খাচ্ছে,
সময়ে-অসময়ে প্রতিটি মুহুর্তে ।
মানুষ অল্প সময়ে সীমাবদ্ধ থাকা কোনো অতিথি নয়,
ইচ্ছে করলেই তাড়িয়ে দেওয়া যায়না,
মায়ায় মিশে থেকে ভিতরে লুকিয়ে থাকে চির জনম ধরে।
তাই এই একটিমাত্র অসুখ আমাকে আজীবন অসুস্থ করে রাখবে ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।