স্মার্ট ফোনের স্মার্ট বাংলাদেশ
গোলাপ মাহমুদ সৌরভ

মোবাইল হলো সময়ের সঙ্গী। দেশ বিদেশে মিনিটে মিনিটে জরুরী যোগাযোগের উত্তম বাহন। তাই বলা যায়,সর্ব প্রথম সাধারণ মোবাইল থেকে বর্তমানে স্মার্ট ফোনের গুরুত্ব অপরিসীম। যেখানে খুব কম সংখ্যক মানুষ মোবাইল ব্যবহার করতো, মানুষ আগে মোবাইলে কথা বলতে পারতোনা, কারণ মানুষ জানতোনা তার ব্যবহার, দেখা যায় একটি গ্রামে সচারাচর দুই এক জনে মোবাইল ব্যবহার করতো তাও আবার নরমাল মোবাইল সাদা কালো ডিসপ্লে, কিন্তু সাধারণ ননস্মার্ট মোবাইলের দাম ছিলো অনেক টাকা, যা সবাই কিনে ব্যবহার করতে পারতোনা । সীম ছিলো নরমাল এবং আইএসডি, নরমাল সীম দিয়ে শুধু মাত্র দেশের ভিতরে সীমাবদ্ধ ছিল বাহিরে কথা বলা যেতোনা, তাই বাহিরে (বিদেশে) কথা বলার জন্য প্রয়োজন হতো আইএসডি সীম কার্ড, তারপর রিচার্জ সিস্টেম ছিলো না, ছিল কার্ড সিস্টেম, ৩০০ টাকা এক মাস ৬০০ টাকা তিন মাস। তারপর আস্তে আস্তে মানুষ মোবাইল ফোন চালানো শিখে কারণ জরুরি যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে মোবাইল ফোনের গুরুত্ব বুঝতে পারে, পুরো পৃথিবী জুড়ে যখন মানুষের মাঝে মোবাইল ফোনের চাহিদা বেড়ে যায় তখনই প্রযুক্তির উন্নতি হতে থাকে, কয়েক বছরে মোবাইল ফোনের চাহিদা ব্যপক বিস্তৃতি লাভ করে, মোবাইল কোম্পানি গুলো মানুষের মাঝে মোবাইল ফোনের চাহিদা বাড়াতে অল্প টাকা বাজারজাত করে মানুষের হাতে হাতে মোবাইল ফোন পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়, তারপর চায়না কোম্পানি গুলো আরো প্রযুক্তির উন্নতি লাভ করে অল্প টাকা স্মার্ট ফোনের চিন্তা করে এবং সফলতা লাভ করে বর্তমানে স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে স্মার্ট দেশ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ পালন করে। যেমন – অপু ও তনুর গল্পের মাঝে আমরা স্মার্ট ফোনের স্মার্ট বাংলাদেশ খুঁজে পাই..
অপু – কিরে তনু তোদের ঘরে মোবাইল ফোন কিনেছিস?
তনু- হ্যা, আর বলিস না, পুরো গ্রামে একটাও মোবাইল নাই, বাবা বিদেশে কাজ করে, বড় ভাই ঢাকা চাকুরী করে, সহজে তাদের খুঁজ পাইনা, তাছাড়া দুই মাইল হেঁটে বাজারে গিয়ে ব্যবসায়িকের মোবাইলে কথা বলতে হয় মাস শেষে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা বিল আসে।
অপু- বলিস কী? পাঁচ হাজার টাকা বিল!
তনু- হ্যা, তাই বড় ঢাকা থেকে আট হাজার দুইশত টাকা দিয়ে x20 মোবাইল এবং সাত হাজার টাকা দিয়ে আইএসডি সীম কার্ড কিনে পাঠিয়েছে।
অপু- দেখি আমার হাতে দে একটু ধরে দেখি, কিভাবে কথা বলিস আমাকে শিখাবি?
তনু- হ্যা শিখাবো, তোর ভাই ঢাকা থাকে বাড়িতে আসলে বলবি আমার নম্বর টা নিতে তারপর মাঝে মাঝে কল দিলে আমি তোকে দিবো তুই কথা বলবি,দেখবি বাতাসের গতিতে সেকেন্ডে সেকেন্ডে কথা আছসে।
অপু- প্রথমে কি বলতে হয়?
তনু – কানের মাঝে এই ভাবে মোবাইল টা ধরে হেলো বলবি তারপর ওখান থেকে আওয়াজ আসবে।
অপু- জানিস তনু তুই যখন মোবাইল হাতে নিয়ে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাস তখন কতো মানুষ তোর দিকে তাকিয়ে থাকে।
তনু- আমার দিকে না বল আমার মোবাইল ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকে।
অপু- হ্যা, সবাই আপসোস করে যদি মোবাইল টা ধরে একটু দেখতে পারতাম।
তনু- আপসোস তো করবেই কারণ এটা একটা আনকমন জিনিস তাছাড়া এটার ব্যবহার সবাই জানে না।
অপু- ঠিক বলেছিস, তুই জানিস পুরো গ্রামের মানুষের উপকারে আসে এই মোবাইল টা, সবাই সবার পরিবার এবং আত্মীয় স্বজনরা ফোন করে খুঁজ খবর নেয়।
তনু- আমি ও যে কারো কল আসলে যখন তখন ছুটে যাই মানুষের বাড়ি আর এতে আমি খুব আনন্দ বোধ করি।
অপু- আমি বুঝতে পারি না এতো দূর থেকে কথা আসে কি ভাবে কোন তারতোর নেই!
তনু- এটাকেই বলে প্রযুক্তি, তার ক্ষমতা অনেক বহুদূর থেকে নেটওয়ার্ক এর সাহায্যে কথা নিয়ে আসে যা আমরা সহজেই বুঝতে পারি এবং শুনতে পারি।
অপু- তনু দেখিস এর ব্যবহার একদিন ব্যপক বিস্তার লাভ করবে তখন আমিও একদিন মোবাইল ফোন কিনবো। এমনকি বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে এবং এর গুরুত্ব বাড়তে থাকবে।
তনু- তুই ঠিক বলেছিস,কারণ এটি সহজেই দেশ-বিদেশের খবর পেতে সাহায্য করে। মানুষের দূর চিন্তা থেকে মুক্ত করে।
অপু- তাহলেতো মোবাইল ফোন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে প্রথম ভূমিকা পালন করবে।
তনু- অবশ্যই হাতে হাতে মোবাইল ফোন পৌঁছে যাওয়া মানেই স্মার্ট বাংলাদেশ।
অপু- সবই বিজ্ঞানের প্রযুক্তি, মানুষ ইচ্ছে করলেই সব পারে, বাতাসের মাধ্যমে নেটওয়ার্কের চলাচল কি অদ্ভুত ব্যাপার।
তনু- তুই দেখিস আজ পুরো গ্রামে আমার হাতে একটি মোবাইল ফোন একদিন সময়ের পরিবর্তন হবে এবং বিজ্ঞানের প্রযুক্তি ও বাড়বে।
অপু- হ্যা প্রযুক্তি তো আর থেমে নেই ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলছে।
তনু- আজ আমার হাতে সাধারণ মোবাইল দেখে মানুষের মাঝে কৌতুহল জাগে এবং কথা বলতে ইচ্ছে পোষণ করে, হাতে নিয়ে হাঁটলে নিজেকে স্মার্ট মনে হয়।
অপু- একম একদিন আসবে একজন শিশুর হাতে ও স্মার্ট ফোন দিয়ে মা ঘরের কাজ কর্ম করবে আর শিশুরা মোবাইলে কাটুন দেখে সময় পার করবে।

কয়েক বছর পরেই প্রযুক্তি আপডেট করে স্মার্ট ফোনের আবিষ্কার হলো। পৌঁছে গেলো অজপাড়ার মানুষের হাতে হাতে স্মার্ট ফোন। আর স্মার্ট ফোনের ক্যামেরা দিয়ে ছবি, সেলফি, ভিডিও তৈরী করা যায়, আগে সুন্দর একটি ছবির জন্য স্টুডিওতে জেতে হতো এখন যখন তখন যে কোন জায়গা নিজেই নিজের মোবাইলে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করে ছবি কিংবা ভিডিও তৈরী করা যায়। মোবাইল ফোন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পাশাপাশি তৈরি করেছে বিভিন্ন অ্যাপস যা স্মার্ট ফোনের চাহিদার সাথে অ্যাপসের গুরুত্ব বেড়েছে, যা পোস্ট করে কিংবা ভিডিও পোস্ট করলে সহজেই দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে মানুষ সহজে দেখতে এবং জানতে পারে। এখন পৃথিবীর সব দেশেই প্রযুক্তির উন্নতি হচ্ছে এবং দৈনন্দিন এর চাহিদা বাড়ছে যদিও মোবাইল ফোন এখন আর আগের মতো ফ্যাশন মনে হয় না বরং নিজের প্রয়োজন বলে ব্যবহার করি। যত দামী মোবাইল ফোন হোক মানুষের মাঝে কৌতুহল সৃষ্টি করেনা কারণ এখন সবার হাতে হাতে মোবাইল ফোন পৌঁছে গেছে। আজ এককথায় বর্ণনা করা যায় যে, প্রযুক্তি মানেই উন্নতি আর স্মার্ট মানেই বাংলাদেশ। প্রযুক্তির কাঁধে ভর করে সর্ব ক্ষেত্রে উন্নতি সাধন করে বর্তমানে যে সাফল্যের দ্বার উন্মোচিত হয়েছে তাকেই বলে স্মার্ট ফোনের স্মার্ট বাংলাদেশ। প্রযুক্তি নির্ভর দেশ গড়তে বিজ্ঞানের গুরুত্ব অপরিসীম। দিনের আলো গড়িয়ে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই মানুষের মাঝে প্রযুক্তির উন্নতি হচ্ছে।

1 Comment

  1. আমি আনন্দিত আপ্লূত ও অনুপ্রাণিত এবং কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি সম্পাদক মহোদয় কে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *