শিশু কিশোরের প্রিয় আল মাহমুদ
ইব্রাহিম জুয়েল: শিশু এবং কিশোরদের একটাই স্বপ্ন যদি আজ পড়াশোনার ছুটি দিতে পারতো কতই না মজা লাগতো। কেউ বুঝে না তাদের কষ্ট। কি আর করা একা একা নিজে নিজে অঙ্ককে বকা দেয়। কিন্তু হঠাৎ করেই এই সবুজ ধরনীর বুকে ছোট্ট সোনামনি ও কিশোর উদ্দেশ্য করে বলে উঠেন………… কবি আল মাহমুদ –
অঙ্ক নিয়ে বসলে আমার
কখন কি যে হয়
টেবিলটাও পর হয়ে যায়
বইগুলো সব ভয়।
একদম তাই এই কথাটা তো আমাদেরই । এইতো আপনার আমার প্রিয় কবি আমাদের পক্ষে হয়ে আওয়াজ তুলেছে। কেউ বুঝে না আমাদের যাক কেউ বুঝক বা না বুঝক আল মাহমুদ তো ঠিকই বুঝেছেন।
আমাদের মাঝে মধ্যেই কত কিছু হওয়ার জন্য ইচ্ছে হয়।
মনে হয় শহর ছেড়ে সবুজ গায়ে ঘুরি আবার কখনো কখনো মনে হয় পাখি হয়ে উড়ি।
তাইতো আমাদের আল মাহমুদ তাহার লেখার জাদু দিয়ে বলে উঠেন।
আমার কেবল ইচ্ছে করে
নদীর কাছে থাকতে
বকুল ডালে লুকিয়ে থেকে
পাখির মত ডাকতে।
আহা কি করে বুঝেন তিনি আমাদের মনের ভিতরে কথা। শুধু এখানে সমাপ্তি নয় আরো আছে….
তখন কেবল ভাবতে থাকি
কেমন করে উড়বো
কেমন করে শহর ছেড়ে
সবুজ গায়ে ঘুরবো।
এইতো সবইতো আমাদের কথাই ওনি কেন এত মনোমুগ্ধকর ভাবে আমাদের মনের কথা পড়তে জানেন। প্রশ্ন উঠতে পারে যে কারো মনেই। তখনই শিশু কিশোর চিৎকার করে বলতে থাকে আল মাহমুদ আমাদের প্রিয় কবি।
তিনি আমাদের আটকে রাখেনি পড়ালেখা দুষ্টামি আর কল্পনাতে। তিনি তুলেছেন ইতিহাসের এক অংশ
ট্রাক ট্রাক ট্রাক
ট্রাকের মুখে আগুন দিতে
মতিয়ুরকে ডাক
কোথায় পাবো মতিয়ুরকে
ঘুমিয়ে আছে সে!
তোরাই তবে সোনামানিক
আগুন জ্বেলে দে।
৬৯ এর ঐতিহাসিক গণ- আন্দোলনে কিশোরদের অনুপ্রেরণা জাগিয়ে ছিল এই ভাবেই। এমন করে অনুপ্রেরণা কেউ কি জাগিয়ে ছিল?? গত পাঁচ যুগে। এমন দুঃসাহসিক কাজে ডেকেছেন শিশু কিশোরকে। তাই তো তিনি সকলের প্রিয়। তার প্রতিটি ছন্দ মন জুড়ে দিবে যে কাউকেই।
তিনি বাংলাকে ভালো বাসতেন মাতৃভূমিকে আপন করে চাইতেন তাইতো তিনি আমাদের হয়ে আকুতি মিনতি করে জানিয়েছিলেন –
প্রভাতফেরি প্রভাতফেরী
আমায় নেবে সঙ্গে
বাংলা আমার বচন,আমি
জন্মেছি এই বঙ্গে।
মাঝে মাঝে মনে হয় আল মাহমুদ সবজান্তা কি করে আমাদের মন বুজেন? তিনি যদি বেঁচে থাকতেন ইসস। সবই আমাদের মায়া… আমরা স্যতিই বলতে মায়া নিয়েই বেচে আছি আদৌ তাই তো কবি বলেন ।
ছায়া কেবল ছায়া
ছায়ার ভেতর বসত করে
চিরকালের মায়া
মায়ার মোহে মুগ্ধ আমি
মায়ায় ডুবে থাকি
মায়ার ঘোরে বন্ধি আমি
নিজকে বেঁধে রাখি।
—- কী মনে হচ্ছে না তিনি আসলেই কি সবজান্তা। হে তাই তো তিনি সকলের কাছে এত এত প্রিয়।
এইতো কিছুদিন পর আমাদের প্রিয় আল মাহমুদের জন্মদিন তাকে গভীর মনে শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা। আমরা চাই আল্লাহ তায়ালা ওনাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুক। আসছে ১১ জুলাই তার জন্মবার্ষিকী। বাংলা সাহিত্য সকল কিছুইতে বিচারন করা কবি আল মাহমুদ। তিনি আমাদের জন্য লিখেছেন ছড়া কবিতা ও বিখ্যাত অনেক কিশোর উপন্যাস।
তিনি আসলেই একজন ভাগ্যবান কবি যার লেখার জাদুতে মন জুড়িয়ে দিবে যে কাউকেই। তিনি কেবল সোনালি কাবিনের কবি নন তিনি ফুল পাখিদের কবি যার কবিতা থেকে ছড়িয়ে পড়ে কাঁঠালচাপার ঘ্রাণ।
কেনই বা সবার প্রিয় হবেন না আল মাহমুদ? কে শুনেনি তার কাঁঠাল চাপার ছন্দ এই ছন্দ ভর করে তো আজ সবার মনে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।
কি চমৎকার ভাবেই না তিনি বলেছেন শিশু কিশোর মনের কথা। তা আমাদের সবারই জানা কেউকে কি আদৌও পাওয়া যাবে যে কাঁঠাল চাপার ছন্দ সে পড়েনি?
কি মুগ্ধকর ভাবেই বলেছিলেন বাংলাভাষী সকল শিশু কিশোরদের প্রিয় কবি আল মাহমুদ –
আম্মু বলেন পড়রে সোনা
আব্বু বলেন মন দে
পাঠে আমার মন বসে না
কাঁঠাল চাপার গন্ধে।
তাহার এই ছড়া এবং তাহাকে কখনো কেউ ভুলবেনা
সকলের স্মৃতিতে অমলিন হয়ে থাকবেন তিনি।
ইব্রাহিম জুয়েল
ফুলগাজী, ফেনী